আধুনিক যুগ বলতে কী বুঝ? আধুনিক যুগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বর্ণনা কর।

admin

ভূমিকা :

রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে আধুনিক যুগের উদ্ভব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাষ্ট্রচিন্তার কাল নির্ণয় সময়কে কেন্দ্র করে নয় বরং চিন্তা-ভাবনার অভিনবত্ব দ্বারা নির্ধারিত হয়। সমগ্র মধ্যযুগ ব্যাপী রাষ্ট্রচিন্তা একান্তই ধর্মকেন্দ্রিক ছিল। পরিষদীয় আন্দোলন, সংস্কার আন্দোলন এবং শাস্তি সার্বভৌমত্বকে কেন্দ্র করে যে মানবিক যুক্তিবোধের এই নতুন ভাবনা রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে আধুনিক যুগ বলে পরিচিত। এ সময় রাষ্ট্র থেকে গির্জা পৃথক ও অধীনস্থ হয়। পোপ উন্মেষ ঘটে তা রাষ্ট্র, আইন, সাম্য, স্বাধীনতা, গির্জা, পোপ, ধর্ম, নৈতিকতা প্রভৃতি সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়। রাজার নিয়ন্ত্রণে আসে, ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয় বলে স্বীকৃত হয়। রাষ্ট্র শক্তিশালী সার্বভৌমত্বের প্রতীকে পরিণত হয় এবং জনগণের জন্য সাম্য ও স্বাধীনতা উন্মুক্ত হতে থাকে। তাই এ যুগে কতিপয় স্বতন্ত্র ও মৌলিক বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়।


আধুনিক যুগ বলতে কী বুঝ? আধুনিক যুগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বর্ণনা কর।


আধুনিক যুগ :

ইংরেজি Modern শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ আধুনিক। ইংরেজি Modern শব্দটি এসেছে Mode থেকে যার বাংলা অর্থ পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া। অর্থাৎ যে পদ্ধতি সনাতন পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এবং যা বর্তমানের সাথে সংগতিপূর্ণ তাকে আধুনিক যুগ বলে । আধুনিক যুগের চিন্তাভাবনা মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা থেকে সম্পূর্ণ পৃথক । ম্যাকিয়াভেলি আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তিনি তাঁর 'The Prince' গ্রন্থে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি তাঁর রচনাতে রাষ্ট্রীয় আইন ও ঐশ্বরিক আইন যে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রের তা তিনি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেন। আধুনিক যুগে ধর্ম রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ম্যাকিয়াভেলি রাষ্ট্রকে সার্বভৌম শক্তির প্রতীক বলে মনে করেন। তার পূর্বে রাষ্ট্র সম্পর্কে কেউ এত গভীরভাবে চিন্তা করেননি। এজনই তাকে আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনের জনক বলা হয়।


আরো পড়ুন:আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী? আলোচনা কর।


আধুনিক যুগে যুক্তিবাদী ভাবধারা বিশেষ প্রাধান্য বিস্তার করে। সপ্তদশ শতকে যুক্তিকে রাষ্ট্রের মূলভিত্তি হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে এর গুরুত্ব হ্রাস পায়। আধুনিক যুগে দর্শনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় তা হলো কুসংস্কারমুক্ত স্বাধীন চিন্তার উন্মেষ ঘটে, ধর্মীয় প্রভাব বিশেষ করে গির্জার শক্তি হ্রাস পায়, মানবতাবাদী ও বিজ্ঞানভিত্তিক দর্শনের সূত্রপাত ঘটে।


আধুনিক যুগের উদ্ভব বা সূত্রপাতের সাথে যেসব ধারণার সম্পর্ক রয়েছে তার মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য ধারণা হলো রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণের মধ্য দিয়ে এর সূত্রপাত হয়েছে। রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, "Renaissance means revived of art and letters under influence of classical models in 14th to 16th century period of its progress, style of art and architecture developed by it, any similar revival."


আধুনিক যুগে দর্শনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় তা হলো কুসংস্কারমুক্ত স্বাধীন চিন্তার উন্মেষ ঘটে, ধর্মীয় প্রভাব বিশেষ করে গির্জার প্রভাব হ্রাস পায়, মানবতাবাদী ও বিজ্ঞানভিত্তিক দর্শনের সূত্রপাত ঘটে।

তাই বলা যায়, মধ্যযুগেই রোপিত রাষ্ট্রচিন্তার বীজ, যা অঙ্কুরিত ও বিকশিত হয়ে পঞ্চদশ শতাব্দীর পর অন্যাবধি মানবসমাজের স্থায়ী দর্শনের যে রূপ লাভ করেছে তাই আধুনিক যুগ।


আধুনিক যুগের বৈশিষ্ট্য :

প্রাচীন ও মধ্য যুগের ন্যায় আধুনিক যুগেরও গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে আধুনিক যুগের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :


১. ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ : আধুনিক যুগের যেসব বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ । এই যুগেই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের উন্মেষ ঘটে। আধুনিক যুগের আবির্ভাবের ফলে ব্যক্তির যুক্তিবাদিতা ও রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং সে অনেকটা সর্ব মর্যাদায় আসীন হওয়ার সুযোগ লাভ করে। যুক্তি, অভিজ্ঞতা ও বিচারবুদ্ধি দিয়ে সমস্ত ঘটনা ও সিদ্ধান্তকে ব্যক্তি বিশ্লেষণ করতে আরম্ভ করায় গির্জার প্রভাব কমে আসে। সমাজ ও রাষ্ট্রে নির্মাতা ব্যক্তি, ঈশ্বর নয় এবং মনুষ্যসৃষ্ট আইন দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্র শাসিত হয়, প্রাকৃত বা ঈশ্বরের আইন দ্বারা নয়। অর্থ এ যুগে ধর্ম, রাষ্ট্র ও সমাজের উপর মানুষের অবস্থানকে সুনিশ্চিত করা হয়। তাই বলা হয়, এ যুগেই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের জন্ম হয়েছে।


আরো পড়ুন: রাষ্ট্রচিন্তা কী? রাষ্ট্রচিন্তার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা কর।


২. পুঁজিবাদের উত্থান : আধুনিক যুগের উল্লেখযোগ্য একটি বৈশিষ্ট্য হলো পুঁজিবাদের উত্থান। মধ্যযুগের সামন্তবাদের ধ্বংসাবশেষের উপর পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠিত। এখানে ভূমির চেয়ে যন্ত্রের মূল্য বেশি। আর এ পুঁজিবাদের ধারা থেকেই উদ্ভব হয়েছে সাম্রাজ্যবাদের। এ প্রক্রিয়াকে লেনিন "Highest stage of capitalism" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।


৩. যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠা : আধুনিক যুগের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো যুক্তিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। আধুনিক যুগের পূর্বে রাষ্ট্র ও ধর্ম সম্পর্কে খুব কমই যুক্তিনির্ভর ব্যাখ্যা প্রদান করা হতো। সংস্কার আন্দোলন, রেনেসাঁ বিজ্ঞানের বাস্তবতা প্রভৃতি মানুষের মনে যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রবেশ ঘটায়। আধুনিক যুগে মানুষ ভাবাবেগ ও নিছক বিশ্বাসে বিতাড়িত না হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পক্ষপাতী নয় । যুক্তির ক্ষেত্রে যার বাস্তবতা নেই তার মূল্য আধুনিক যুগে খুবই নগণ্য ।


৪. ব্যক্তি স্বমর্যাদায় আসীন : আধুনিক যুগের আবির্ভাবের ফলে ব্যক্তির যুক্তিবাদিতা, রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং সে অনেকটা স্বমর্যাদায় আসীন হওয়ার সুযোগ লাভ করে। জগতের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের চেয়ে পার্থিব জগতের সুখ- দুঃখ সম্পর্কে সে আগ্রহী হয়ে উঠে। যুক্তি, অভিজ্ঞতা ও বিচারবুদ্ধি দিয়ে সমস্ত ঘটনা ও সিদ্ধান্তকে সে বিশ্লেষণ করতে আরম্ভ করায় গির্জার প্রভাব কমে যায়। সমাজ ও রাষ্ট্রের নির্মাতা ব্যক্তি, ঈশ্বর নয় এবং মনুষ্যসৃষ্ট আইন দ্বারা সমাজ রাষ্ট্রশাসিত হয়, প্রাকৃত বা ঐশ্বরিক আইনের দ্বারা নয়। তাই Berki বলেছেন, “ষোড়শ শতাব্দীতে মানুষের মনে এ ধারণার জন্ম হয় এবং ব্যক্তি নিজের মর্যাদায় বসার সুযোগ পেল।"


৫. সাম্য সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ : মধ্যযুগে আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কেবল ধর্মকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। গির্জ মানুষের মনে এ ধারণা তৈরি করে দিয়েছিল যে, ইহজগৎ খুবই তুচ্ছ। পাপ ও পুণ্য হলো আসল এবং গির্জাকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলে পরলোকে গিয়ে মানুষ সুখের মুখ দেখতে পারবে। এ বোধ জনগণের মধ্যে গড়ে উঠায় আর্থসামাজিক বৈষম্যকে তারা আদৌ গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু আধুনিক যুগে মানুষের মন বিষয় আশয়কেন্দ্রিক হয়ে পড়ায় পার্থিব সুখ স্বাচ্ছন্দ্যকে তারা প্রাধান্য দিতে শুরু করে এবং এ কারণে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে বৈষম্য সমালোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়। সাম্য অর্জন সমাজের একশ্রেণির মানুষের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।


৬. সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন : আধুনিক যুগে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মধ্যযুগকে সামন্ততান্ত্রিক যুগ বলা হতো। আধুনিক যুগে লক্ষ্য করা যায় সামন্ততন্ত্রের ভাঙন ও পুঁজিবাদের উত্থান, সামন্ততান্ত্রিক যুগে যে শ্রেণিবৈরিতা বা শ্রেণিবৈষম্য ছিল তার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তবে নতুন আকার ধারণ করে। এসময় সামন্তপ্রভু ও ভূমিদাসের মধ্যে শ্রেণিবৈরিতা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু আধুনিক যুগে বুর্জোয় শ্রেণির আবির্ভাব হওয়ায় সমাজের সম্পদ ও ঐশ্বর্যের মালিকানা বুর্জোয়া শ্রেণির হাতে পুঞ্জীভূত হয়। অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখা দেয়।


আরো পড়ুন: আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় ম্যাকিয়াভেলির অবদান আলোচনা কর।


৭. জাতীয় রাষ্ট্রের উদ্ভব : আধুনিক যুগের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো জাতীয় রাষ্ট্রের উদ্ভব। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে বেছাম, জন লক, রুশো ও মন্টেস্কুর চিন্তাধারা ইউরোপের জাতীয় বাষ্ট্রের বিকাশে সহায়তা করে। ফরাসি বিপ্লবে পর সাম্য, স্বাধীনতা ও ভ্রাতৃত্বের সুমহান নীতিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রচিন্তার গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হতে দেখা যায়। মূলত ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্রচিন্তায় তৎকালীন সময়ের প্রেক্ষিতে জাতীয় রাষ্ট্রের আদর্শ প্রসার লাভ করলে ও ফরাসি বিপ্লবোত্তরকারে বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ ধারণার ব্যাপক প্রসার ঘটে।


৮. ধর্মনিরপেক্ষতা : আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অন্যতম প্রবক্তা হলেন আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক ম্যাকিয়াভেলি। তিনি ধর্মকে রাজনীতি থেকে পৃথক করেন। কিন্তু তিনি ধর্মের ভেতর থেকে বের হতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। বর্তমানে অনেক দেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।


আরো পড়ুন: রাষ্ট্রদর্শনের ইতিহাসে আন্দোলনের পরিষদ তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর


৯. রাষ্ট্রকেন্দ্রিক রাজনৈতিক চিন্তাধারা : অতীতের রাষ্ট্রনীতি ধর্ম হারিয়ে ফেলে। কিন্তু আধুনিক যুগে রাষ্ট্রের প্রাধান্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি একটি আইনি ধারায় পরিণত হয়। রাজনীতি পরিধি বিশেষ করে ধর্মীয় রাজনীতির পরিধি অনেকটা সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে Berki বলেছেন, "The predominant দর্শনকেন্দ্রিক হওয়ার কারণে রাষ্ট্রের স্বাতন্ত্র vision is thus narrowly political or civic vision, concerned with man mainly as citizen, subject, member the state" আধুনিক যুগের ব্যক্তি আর ধর্ম ও পাপ-পুণ্য সচেতন ব্যক্তি নয়, বরং সে রাষ্ট্রের সদস্য ও রাজনীতি সচেতন। এসময় সমাজ ও ব্যক্তির সর্ব প্রকার চিন্তাভাবনা ও ধ্যানধারণা রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়।


১০. সমাজতন্ত্রের বিকাশ : আধুনিক যুগের অন্যতম একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সমাজতন্ত্রের বিকাশ। সমাজতন্ত্রবাদীগণ মধ্যযুগীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করে নতুন শোষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কাজে লিপ্ত হয়। যার ফলে সমাজ থেকে শোষণের অবসান হয় এবং মুষ্টিমেয় লোক কর্তৃক সংখ্যাগরিষ্ঠের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা হ্রাস পায়। তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সমাজতান্ত্রিক সমাজ এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আধুনিক যুগের ফল।


১১. রেনেসাঁ ও রাজনৈতিক অগ্রগতি: মানুষের মনে গণতান্ত্রিক চিন্তাধারার উল্লেখ ঘটিয়েছিল রেনেসাঁ আন্দোলন। গির্জার তথাকথিত শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি লাভ করায় স্বাধীনভাবে যে কোনো বিষয় নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করার সুযোগ লাভ করে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ, ধর্মনিরপেক্ষবাদ, জাতীয় রাষ্ট্রের উদ্ভব প্রভৃতি রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণের ফল।


উপসংহার :

উপযুক্ত আলোচনার পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক যুগের সূত্রপাত একদিনে হয়নি। সুদীর্ঘ ফ্রাজনৈতিক পরিবর্তন ও ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে মানুষের চিন্তায় ব্যাপক পরিবর্তনের ফসল হিসেবে মধ্যযুগ আধুনিক যুগে রূপান্তরিত হয়। শক্তিশালী রাজতন্ত্রের বিপরীতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উন্মেষ ধর্মীয় বিধিনিষেধ থেকে মানবিক যুক্তিবোধের মুক্তি এবং ধর্মীয় আইনের পরিবর্তে মানুষের যুক্তিবুদ্ধি আইনি কাঠামো এ যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। পারলৌকিক জীবনের সুখের ধারণা থেকে মুক্ত হয়ে ইহলৌকিক সুখ সমৃদ্ধি ও সাম্যবাদী চেতনাই আধুনিক যুগের সূত্রপাত ঘটতে বেশি ভূমিকা রেখেছে ।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!