ভূমিকা :
আবেগ মানুষের সহজাত ধর্ম। আবেগহীন মানুষ যন্ত্রের মত। মানুষের আচরণে যে বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় তার মূলে রয়েছে আবেগ। আবেগ হলো এমন এক ধরনের জটিল অনুভূতি যার মূলে রয়েছে কতকগুলো সহজাত প্রবৃত্তি এবং কোনো বিশেষ বস্তু বা ধারণা একে জাগরিত করে এবং দেহের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের জন্য এমন কতকগুলো বিশেষ ধরনের দৈহিক প্রকাশ ঘটে, যার জন্য আমরা নানারকম কাজে প্রবৃত্ত হই । ভয় (Fear), রাগ (Anger), ভালোবাসা (Love), ঘৃণা (Hate) প্রভৃতি আবেগের উদাহরণ।
![]() |
শাব্দিক অর্থে আবেগ :
আবেগের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো 'Emotion'। এ 'Emotion' শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ 'Emovrere' থেকে। এর অর্থ বিচলিত হওয়া। সুতরাং শাব্দিক অর্থে বলতে পারি, আবেগ হচ্ছে প্রাণীর এমন এক বিচলিত কার্যাবলিতে অবস্থা যা উদ্দীপক দ্বারা সৃষ্ট এবং যার প্রতিফলন ঘটে ব্যক্তির আবেগজনিত অভিজ্ঞতায় এবং অভ্যন্তরীণ শারীরিক অবস্থার।
আবেগের সংজ্ঞা :
কোনো উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ব্যক্তির মধ্যে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং যা তার অভিজ্ঞতা, আচরণ ও দৈহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রকাশ পায় তাকে আবেগ বলে। এ সংজ্ঞায় আবেগের ৩টি দিক নির্দেশ করে। এ তিনটি আবেগ হলো :
১. অভিজ্ঞতাজনিত, ২.
আচরণগত ও ৩. শরীরগত পরিবর্তন।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
বিভিন্ন
মনোবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে আবেগের সংজ্ঞা নির্দেশ করেছেন। নিচে কয়েকটি সংজ্ঞা দেয়া
হলো : মনোবিজ্ঞানী Webster
আবেগের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে
তিনি তাঁর "The
New International Dictionary' গ্রন্থে বলেছেন “আবেগ হলো একটি ভারসাম্যচ্যুত অভ্যন্তরীণ শারীরিক অবস্থা যা
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দ্বারা অনুভব করা যায় এবং যা ায়ুবিক নাও পারে।” ও মাংসপেশী,
শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, হরমোন এবং অন্যান্য দৈহিক কাজের প্রস্তুতি
তৈরি করে যার প্রকাশ হতেও পারে।
মনোবিজ্ঞানী James Drever বলেছেন, “আবেগ এক প্রকার জটিল সমস্যা। আবেগে
নানাবিধ দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। মানসিক দিক থেকে আবেগ হলো তীব্র অনুভূতিসম্পন্ন এক
প্রকার উত্তেজনাময় অবস্থা এবং এটা আমাদের নির্দিষ্ট এক প্রকার কাজ করতে উদ্বুদ্ধ
করে। "
মনোবিজ্ঞানী ম্যাকমোহন
বলেছেন, “আবেগ ব্যক্তিনিষ্ঠ ও বস্তুনিষ্ট উপাদানের একটি জটিল মিশ্রণ যাতন্ত্র এবং
অস্থিসমূহ দ্বারা পরিচালিত হয়।"
মনোবিজ্ঞানী ডারউইন বলেছেন,
“আবেগের প্রকাশভঙ্গিগুলো জৈব প্রয়োজন সাধনের উপযোগী এবং ক্রমবিকাশের ধারায়
বংশানুক্রমিক চলে আসে।”
মনোবিজ্ঞানী Woodworth & Marquis বলেছেন, "Emotion is a moved or steered up state
of the Individual.
উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলো
পর্যালোচনা করে বলা যায় যে, উদ্দীপকের সাহায্যে প্রাণীর মধ্যে যে আলোড়ন সৃষ্টি
হয় যা তার অভিজ্ঞতা আচরণ এবং শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে প্রকাশ পায় তাকে আবেগ
বলা হয়।
আবেগকালীন শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন :
আবেগের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো দৈহিক পরিবর্তন । আমরা যেসব
বাহ্যিক পরিবর্তন দেখে থাকি, তাদের পিছনে কতকগুলো বিশেষ বিশেষ পরিবর্তন সাধিত হয়।
বাহ্যিক আচরণসমূহ এদের দ্বারাই প্রভাবিত হয়। দেহ অভ্যন্তরে যেসব পরিবর্তন ঘটে তাদের
অধিকাংশ ায়ুতন্ত্র এবং অনালী গ্রন্থির দ্বারা সাধিত হয়। তীব্র আবেগের হয়ে
সাধারণত যেসব দৈহিক পরিবর্তন হয়ে থাকে তা নিম্ন আলোচনা করা হলো :
১. রক্তের চাপ : আবেগের সময়
রক্তের চাপের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। আবেগের সময় রক্তবাহী নালীর সাহায্যে রক্ত
ত্বকের দিকে প্রভাবিত হয়। ফলে লজ্জায় ফর্সা লোকের মুখমণ্ডল লাল হয়ে যায়। আবার
রক্তবাহী নালীর সাহায্যে রক্তত্বক থেকে নিম্নেগতিমুখীও হয়ে থাকে। যেমন- ভয়ে বা
দুঃসংবাদ শুনে আমাদের মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যায়। প্রেসারগঞ্জের সাহায্যে এটা
পরিমাপ করা যায়।
২. হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া ভয়ে
অথবা স্নায়ুবিক উত্তেজনার ফলে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন দ্রুততর হয়। ভয়ে বুক ধড়ফড় এ
কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। তীব্র আবেগের সময় হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া নির্ধারণে
মনোবিজ্ঞানীরা পলিগ্রাফ (Polygraph) নামে উন্নততর যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। তা
দ্বারা হৃদস্পন্দন নির্ধারণ করা যায়।
৩. চোখের তারার প্রতিক্রিয়া
: তীব্র আবেগে সমবেদীনায়ুতন্ত্রের প্রভাবে যেসব দৈহিক পরিবর্তন সৃষ্টি হয় তার
একটি হলো চোখের তারার প্রতিক্রিয়া। আবেগের সময় চোখের তারা বা মনির প্রসারণ এবং
সংকোচন সহজে পরিলক্ষীত হয়। চোখের এ পরিবর্তন পিউপিলো মিটার নামক যন্ত্রের
সাহায্যে পরিমাপ করা যায়।
৪. ঘর্মগ্রন্থির
প্রতিক্রিয়া : তীব্র আবেগের সময় স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের ঘর্মগ্রন্থির উপর
প্রভাব বিস্তার করে, যার ফলে ঘর্মগ্রন্থির কার্য বেড়ে যায় এবং প্রচুর ঘাম নির্গত
হয়। যেমন- কোনো ভালো ছাত্র ক্লাসে পড়া না পারলে যদি তাকে শ্রেণীকক্ষে দাঁড়িয়ে
থাকতে বলা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে তার অন্তর্বাস ঘামে ভিজে গেছে।
৫. লোমের প্রতিক্রিয়া :
তীব্র আবেগে লোমের প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তন দেখা যায়। ভয়ে গায়ের লোম খাড়া
হওয়ার কথা আমাদের সবারই জানা আছে।
৬. লালা ক্ষরণের পরিবর্তন :
আবেগকালীন সময়ে লালা গ্রন্থির ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য তরে আমাদের মুখ
শুকিয়ে যায়।
৭. শ্বাসপ্রশ্বাসের পরিবর্তন
: তীব্র উত্তেজনায় শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বেড়ে যায়। আবার দুঃখের মূহুর্তে আমরা
দীর্ঘশ্বাস ফেলি। এ দু'টি আবেগেই আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাসের পরিবর্তন হয়। নিউমোগ্রাফ
(Pneumograph) এর সাহায্যে শ্বাসপ্রশ্বাসের পরিবর্তন পরিমাপ করা
যায়।
৮. ত্বকের বৈদ্যুতিক প্রবাহ
: প্রবল আবেগের সময় ত্বকের বৈদ্যুতিক প্রবাহ বাধা দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
অর্থাৎ ত্বকের ভিতর রাসায়নিক বৈদ্যুতিক প্রবাহের গতি বেড়ে যায়।
৯. ত্বকের তাপমাত্রার
পরিবর্তন : বিভিন্ন আবেগের দরুণ ত্বকের তাপমাত্রার যথেষ্ট পরিবর্তন হয়।
১০. কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন :
তীব্র আবেগের মুহূর্তে কন্ঠস্বরের তীক্ষ্ণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে একই আবেগ, জগতের
সব মানুষের ক্ষেত্রে অনুরূপ পরিবর্তন সৃষ্টি করে না।
১১. মস্তিষ্কের কার্যাবলির পরিবর্তন : আবেগের ফলে মস্তিষ্ক তরঙ্গে (Brain Wave) নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। স্বাভাবিক অবদান মস্তিষ্কের আলাদা (Alpha) তরঙ্গের আবর্তন প্রতি সেকেন্ডে ৮-১২ বার হয়। কিন্তু আবেগের ফলে এ আবর্তন কমে ৮ এর নিচে নেমে আসে।
১২. মাংসপেশীর কঠিনতা ও স্পন্দন : তীব্র আবেগে আমাদের দেহের মাংসপেশীর বিভিন্ন পরিবর্তন সূচিত হয়। যেমন- রাগে অনেকে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে, কারও কারও পায়ের মাংসপেশীর কঠিনতা লক্ষ্য করা যায়। আবেগের সাথে দ্বন্দ্ব জড়িত থাকলে মাংসপেশীর সম্পন দেখা যায়।
১৩. মুখের তাপমাত্রার
পরিবর্তন : অনেক সময় তীব্র আবেগের সময় মুখের তাপমাত্রার (Oral Temperature) পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
১৪. পাকস্থলী ও অস্ত্রের
ক্রিয়া : তীব্র আবেগে পাকস্থলী ও অস্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। আবার এ সাথে
স্ফিংটার মাংসপেশ অনৈচ্ছিক শিথিলতা আসে, যার ফলে তীব্র আবেগে বা ভয়ে মানুষ (শিশু)
মলমূত্র ত্যাগ করে ফেলে। ১৫. রক্তের উপাদানের পরিবর্তন : তীব্র আবেগে অনালী গ্রন্থি
সক্রিয় হয়ে উঠে এবং রক্তে হরমোন নিঃসরণ করে। ফলে রঙের উপাদানে পরিবর্তন দেখা
যায়। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তে এড্রিনালিন হরমোন পাওয়া যায় না। কিন্তু
আবেগকালীন সময় এ থেকে এড্রিনাল হরমোন নিঃসৃত হয়। এ হরমোন দেহকে কঠিন পরিস্থিতির
সম্মুখীন হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে।
উপসংহার :
উপরিউক্ত আলোচনার
পরিশেষে বলা যায় যে, প্রবল আবেগে মৌখিক অভিব্যক্তি, চোখের ভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে,
যা বাইরে থেকে সহজে পরিলক্ষিত হয়। আবেগের শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু
মানসিক পরিবর্তনও হয়ে থাকে
প্রশ্নঃ- ক্ষুধার শারীরবৃত্তীয় ভিত্তি বর্ণনা কর ।
ভূমিকা :
প্রেষিত আচরণ বলতে আমরা সেসব আচরণকে বুঝি যা অভ্যন্তরীণভাবে সৃষ্ট,গন্তব্যস্থলাভিমুখী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং স্থায়িত্বশীল। মানুষের অধিকাংশ আচরণই প্রেষিত। তবে পরিবর্তন আচরণ (Reflex action) প্রি আচরণ নয়। প্রেষণা যেহেতু শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থা, সেহেতু বাইরে থেকে প্রেষণাকে দেখা যায় না।প্রাণীর কতকগুলো আচরণ থেকে আমরা তার অভ্যন্তরীণ প্রেষণা সম্বন্ধে অনুমান করি। আমরা যখন আচরণের পূর্বশর্তগুলো জানতে পারি। তখনই বলতে পারি যে এ আচরণটি প্রেষিত আচরণ।ক্ষুধার সময় পাকস্থলীর সংকোচন, রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস, জিহ্বার স্বাদের অনুভূতি, স্পর্শকাতরতা ইত্যাদি শারীরিক অবস্থা থেকে ক্ষুধা সম্বন্ধে অনুমান করা যায়।
ক্ষুধার শারীরবৃত্তীয় ভিত্তি :নিম্নে ক্ষুধার শারীরবৃত্তীয় ভিত্তি আলোচনা করা হলো :
ক্ষুধা: মানুষের জৈবিক প্রয়োজনের অন্যতম হলো ক্ষুধা। দীর্ঘসময় ধরে যদি প্রাণীকে খাদ্য থেকে বঞ্চিত রাখা হয় তাহলে তার পাকস্থলীর সংকোচনের জন্য সে ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে। জন্মের পর থেকে মানুষ ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে থাকে। এ তাড়না দূর করার জন্য মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে। তবে সভ্যতার বর্তমান স্তরে মানুষ খাদ্য আহরণের জন্য নিত্যনৈমিত্তিকভাবে চেষ্টা করে না। সমাজ প্রায় সব মানুষের খাদ্য জোগানের এক নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করেছে।
ক্ষুধা একটি অভ্যন্তরীণ শারীরিক অস্বস্তিকর অবস্থা। পাকস্থলীর সংকোচনের সাথে ক্ষুধার অনুভূতির যে সম্পর্ক আছে তা পরীক্ষণের সাহায্যে প্রমাণিত হয়েছে। অবশ্য পাকস্থলী কেটে বাদ দিয়েও দেখা গেছে, পাকস্থলীবিহীন প্রাণীও ক্ষুধার তাড়না অনুভব করতে পারে। Canon and Washbarn প্রথমে পরীক্ষা করে দেখেন যে, পাকস্থলীর সংকোচন প্রসারণই ক্ষুধার জন্য দায়ী। পরবর্তীতে দেখা গেল যে, শুধু পাকস্থলীর সংকোচন প্রসারণই নয়, আরও অনেক কিছুই ক্ষুধা নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি ইঁদুরের পাকস্থলী কেটে দেওয়ার পরও ইঁদুরটি ক্ষুধা অনুভব করে।
Luckhardt and Carlson (1915) দেখেন যে, ক্ষুধার সাথে রক্তের একটা সম্পর্ক রয়েছে। তারা ক্ষুধার্ত কুকুরের রক্ত একটি স্বাভাবিক কুকুরের রক্তে প্রবেশ করান। তাতে উক্ত কুকুরের পাকস্থলীতে ক্ষুধার সময়ের মতো সংকোচন দেখা যায়। আবার পেটপুরে খাওয়া প্রাণীর রক্ত প্রবেশ করালে দেখা যায় যে, সংকোচন থেমে গেছে।
আবার যকৃতের ক্ষেত্রে পাকস্থলীতে খাদ্য পরিপাক আরম্ভ হলেও এর সম্পূর্ণ পরিপাক আরম্ভ হয় যকৃতে। যকৃত পুষ্টি ও খাদ্যের মধ্যে পৃথকীকরণ করে এবং পুষ্টির মাত্রা ও পরিমাণ রেকর্ড করে। এর মাত্রা কম হলে এটা তৎক্ষণাৎ মস্তিষ্কে সংবাদ প্রেরণ করে এবং মস্তিষ্কের তাড়নার ফলে ক্ষুধার পরিতৃপ্তির জন্য প্রাণী করুণ আচরণ করে। প্রত্যক্ষভাবে রক্তে এবং পরোক্ষভাবে যকৃতের মাধ্যমে মস্তি কে খাদ্য পরিবাহিত হয়।
মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। Keesey and Powley (1975) অভিমত প্রকাশ করেন যে, হাইপোথ্যালামাসের দুটি নির্দিষ্ট এলাকা Lateral Hypothalamus (LH) এবং Ventromodial Hypothalamus (VNH) ক্ষুধার সাথে সম্পর্কযুক্ত। LH খাদ্য গ্রহণ আরম্ভ করা এবং VNH খাদ্যগ্রহণ শেষ করার ভূমিকা পালন করে। শর্করা জাতীয় উপাদানের ঘাটতি হলে Hypothalamus এর Feeding Region নামের একটি বিশেষ স্থানে শায়ুবিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং তা প্রাণীর মধ্যে ক্ষুধার অনুভব জাগিয়ে তোলে। এছাড়াও রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে খিদে কমে যায়। প্রাণীদেহে ইনসুলিন হরমোন প্রবেশ করালে প্রাণীর খিদে
বৃদ্ধি পায়।
উপসংহার' :
পরিশেষে বলা যায় যে, যেসব প্রেষণা প্রাণীর জৈবিক অস্তিত্ব থেকে সৃষ্টি হয় সেসব প্রেষণাকেই জৈবিক প্রেষণা বলা হয়। এসব গ্রেষণা দেহ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়। এসব প্রেষণা শিক্ষালব্ধ নয়, এগুলো জন্মগত। তাই এসব প্রেষণাকে সহজাত প্রষণাও বলা হয়। আর এসব প্রেষণাকে মুখ্য প্রেষণা বলার কারণ হলো আমাদের জীবন ধারণের জন্য এদের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।