ভূমিকা :
জন লক ছিলেন একজন বাস্তববাদী, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অধিকার সচেতন রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। লবের রাষ্ট্রচিন্তা হতে মানুষের সব থেকে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অধিকার সম্পত্তিকে বাদ দিলে তা শ্রীহীন তথা কাঠামোহীন হয়ে পড়বে। এ কারণে সম্পত্তি সম্পর্কে লকের মতবাদই মূলত তাকে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী রাষ্টচিন্তাবিদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এক্ষেত্রে লকের অভিমত যেমন সুস্পষ্ট, তেমনি ৰাস্তবও বটে। একজন মানুষ সমাজভুক্ত হবে কেবল তার সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্যই। তাই সমাজকে তার জনগণের সম্পত্তি সংরক্ষণ করতেই হবে, নচেৎ সমাজ তথা রাষ্ট্রের কোনোই দরকার নেই। ফলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন। লক তাঁর "The Two Treatise on Civil Government" গ্রন্থে সম্পত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
জন লকের সম্পত্তি তত্ত্ব :
জন লক তাঁর 'Second Treatise of Civil Government' গ্রন্থের পঞ্চম অধ্যায়ব্যাপী সম্পত্তি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। লকের সম্পত্তি তত্ত্বটি তাঁর গ্রন্থে যেভাবে পরিবেশিত হয়ে তা নিম্নোক্তভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
১. সম্পত্তির উদ্ভব,
২. সম্পত্তির তত্ত্ব ও যুক্তি,
৩. সম্পত্তির শ্রম তত্ত্ব,
৪. শ্রম তত্ত্বের গুরুত্ব,
৫. সম্পত্তির অপচয়।
১. সম্পত্তির উদ্ভব : লক তাঁর 'Second Treatise of Civil Government' গ্রন্থের একটা পুরো অধ্যায় সম্পত্তি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। ২৬ নং অনুচ্ছেদে তিনি বলেছেন যে, আদিতে সম্পত্তি বলতে কিছু ছিল না। প্রকৃতির অকৃপণ ভাণ্ডার সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকৃতি রাজ্যের মানুষ প্রকৃতির ভাণ্ডার থেকে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু এ ব্যবস্থা স্থায়িত্ব লাভ করতে পারে নি। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ ও মনুষ্যের জীবের উপর সবার অধিকার থাকলেও মানুষের দেহের উপর কেবল মানুষেরই অধিকার ছিল। অর্থাৎ মানুষকে কেউ ব্যবহার করতে পারতো না। মানুষ তার হাত, পা, বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তি দিয়ে প্রকৃতির ভাণ্ডার থেকে যা সংগ্রহ করতো তার উপর অধিকার কায়েম করতে তৎপর হয়ে পড়ত। লকের বিশ্লেষণে আমরা পাই প্রকৃতি প্রদত্ত জিনিসে মানুষ শ্রম ও শক্তি বিনিয়োগ করার ফলে সে জিনিস তার নিজস্ব হয়ে যায় এবং এটাই তার সম্পত্তিতে পরিণত হলো। কেবল মানুষ যে শ্রম বিনিয়োগ করে সম্পত্তি সৃষ্টি করলো তা নয়। বিভিন্ন জাতের পোষা জীবজন্তু ও চাকরের সাহায্যে প্রকৃতির ভাণ্ডার থেকে দ্রব্যসামগ্রী আহরণ করল এবং সেসব বস্তু তার সম্পত্তিতে পরিণত হলো। ঝর্ণার জলে সকলের অধিকার সমান। কিন্তু যে মুহূর্তে এক ব্যক্তি কলসি করে সে জল বহন করে আনল সে মুহূর্তে সেটা তার সম্পত্তিতে পরিণত হলো।
২. সম্পত্তি তত্ত্ব ও যুক্তি : লক তাঁর সম্পত্তি তত্ত্বের সাথে যৌক্তিকভাবে সংযুক্ত করে ফেলেছেন। ৩০ নং অনুচ্ছেদে তিনি এ কথাটাই বলতে চেয়েছেন যে, যে মানুষটি তার শ্রমের বিনিময়ে প্রকৃতি থেকে সম্পদ আহরণ করে আদল ব্যক্তিটিকে সে আহৃত সম্পদ থেকে বঞ্চিত একেবারে অযৌক্তিক। আহত হওয়ার পূর্বে সম্পদটি প্রকৃতির ভাণ্ডারে ছিল এবং তার উপর সবার সমান অধিকারও ছিল। কিন্তু শ্রমের বিনিময়ে আহৃত জিনিসটির উপর অন্য সবার অধিকার বসতে পারে না। যে আহরণ করেছে, সে ভোগদখল করতে পারবে। লক মনে করতেন, প্রকৃতির রাজ্যে এ যুক্তির অস্তিত্ব থাকলেও সকলে সমান নিষ্ঠার সাথে মেনে চলতো না। যৌক্তিকতা অবহেলিত হওয়ায় সম্পত্তির নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে পড়েছিল। মানুষ সভ্য সমাজ গড়ে তোলার পর নানারকম নিয়ম অনিয়ম তৈরি করল। কিন্তু তার অবলুপ্তি ঘটেনি। অর্থাৎ প্রাকৃত আইন ও পুরো আইন বা মানুষের তৈরি আইন পাশাপাশি অবস্থানের কথা লক বলে গেছেন ।
৩. সম্পত্তির শ্রম তত্ত্ব : শকের সম্পত্তি তত্ত্বের সাথে এম তত্ত্বও এসে যায়। সম্পত্তির উৎস যদিও প্রকৃতি, তবুও প্রকৃতির অফুরন্ত ভাণ্ডারকে একা বা একাধিক ব্যক্তি নিজের সম্পত্তি বলে দাবি জানাতে পারে না। প্রকৃতি প্রদত্ত জিনিসের পিছনে শ্রম নিযুক্ত হলেই সেটা সম্পত্তিতে পরিণত হয়। নক সবিস্তার এ বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছেন। যে প্রকৃতির ভাতার থেকে আহরণ করে বা বহন করে তার কাছে সেটাই সম্পত্তি। এখানে স্পষ্ট যে, শ্রম ছাড়া সম্পত্তি সৃষ্ট হতে পারে না। অন্যভাবে বলা যায় যে, সম্পত্তি উদ্ভব কখনো সম্ভব হতো না যদি না শ্রমের বিনিয়োগ ঘটা। তাই লক বলেছেন, "He buy his labour does enclose it from the common. " শ্রমের বিনিময়ে সংগৃহীত হওয়ার পরে অন্য কেউ, যার নাম নেই, বলতে পারে না যে, এ দ্রব্যের উপর তারও সমান অধিকার আছে। প্রকৃতিতে নানারকম জিনিস তৈরি করার সময় ভগবান মানুষকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, সে যেন তার শ্রম লাগিয়ে প্রকৃতি থেকে নিজের ভোগের জন্য আহরণ করে নেয়। লকের ভাষায়, "God and his reason commanded him to subdu the earth, ie, to improve it for the benefit of life." ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও প্রকৃতির দান এ দু'য়ের মাঝখানে আছে ব্যক্তির শ্রম। কেবল শ্রমই প্রকৃতির দানকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হতে সাহায্য করে। কেবল শ্রমই প্রকৃতির দানকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হতে সাহায্য করে।
৪. শ্রম তত্ত্বের গুরুত্ব : সম্পত্তি তত্ত্ব প্রচার করে লক শ্রম তত্ত্বেরও প্রচার করে গেছেন। কোনো জিনিসের পিছনে যত বেশি শ্রম বিনিয়োগ করা হবে, সে জিনিসের মূল্য তত বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ জিনিসের মূল্য নির্ধারণ হবে শ্রমের পরিমাণের দ্বারা। উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব প্রচার করার জন্য মার্কস লকের শ্রম তত্ত্ব পুরোপুরি গ্রহণ করেন। অবশ্য তিনি একে পুঁজিবাদের বিকাশের প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করে গেছেন। পুঁজিবাদকে আক্রমণ করার জন্য মার্কস লকের শ্রম তত্ত্ব ব্যবহার করেছেন। তত্ত্বের সাহায্যে তিনি পুঁজিবাদী শোষণের গভীরতা ও ব্যাপ্তি দেখিয়েছেন।
৫. সম্পত্তি অপচয় অপছন্দনীয় : প্রকৃতির অফুরন্ত ভাণ্ডার থেকে নিজের শ্রমের বিনিময়ে আহরণ করলে তা যদি সম্পত্তিতে পরিণত হয়, তাহলে যে কোনো মানুষ ইচ্ছামতো সম্পত্তির পরিমাণ স্ফীত করে তুলতে পারে। পুঞ্জীভবনের কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না। সম্পত্তি রক্ষার জন্য মাণিক পুরো প্রশাসকের কাছে আবেদন জানাতে পারে। কিন্তু কত পরিমাণ সম্পত্তির মালিক একজন ব্যক্তি হতে পারে সে বিষয়ে কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই বলে লক মনে করতেন। তাই বলে সম্পত্তির উপর কোনো রকম সীমাবদ্ধতা থাকবে না তা হতে পারে না। লকের ভাষ্য অনুযায়ী, যেহেতু সম্পত্তি একটা প্রাকৃত অধিকার, সেহেতু প্রাকৃত আইন ও যুক্তি সম্পত্তির পরিমাণ স্থির করে দিয়েছে বলে লকের ধারণা। যৌক্তিকতার উল্লেখ আগেই করা হয়েছে
জন লকের সম্পত্তি তত্ত্বের সমালোচনা :
পণ্ডিতগণ লকের সম্পত্তি তত্ত্বকে নানাভাবে সমালোচনা করেছেন। উক্ত সমালোচনার মোদ্দাকথা হলো-
১. অবাস্তব: লকের সম্পত্তি তত্ত্বটি বহুলাংশে কাল্পনিক, অবাস্তব ও অতিকাল্পনিক। কেননা এটি বাস্তব ধারণার সাথে বহুলাংশে অসংগতিশীল।
২. অকার্যকর শ্রম তত্ত্ব : লকের সম্পত্তির শ্রম তত্ত্বটি সবসময় কার্যযোগ্য নয়। তবে তা কিছু কিছু অনুশীলনযোগ্য। কেননা অনেক সময় শ্রম ছাড়াও সম্পত্তি অর্জন সম্ভব।
৩. শ্রেণি সংঘাত সৃষ্টি : লকের সম্পত্তি তত্ত্বটি পুরো পুঁজিবাদী অর্থনীতির সহায়ক মতবাদ । এটি বুর্জোয়া অর্থনীতিকে উৎসাহিত করে।
৪. উত্তরাধিকারহীন : লকের সম্পত্তি তত্ত্বে উত্তরাধিকার বিষয়ক কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় বিভ্রান্তিকর সৃষ্টি করেছে।
৫. পুঁজিবাদী : লকের সম্পত্তি তত্ত্বটি পুরো পুঁজিবাদী অর্থনীতির সহায়ক মতবাদ। এটি বুর্জোয়া অর্থনীতিকে উৎসাহিত করে।
৬. অনির্দিষ্ট : সম্পত্তির পরিমাণ কিরূপ হবে সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি সম্পত্তি পুঞ্জীভূতকরণের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থার কথা বলেননি ।
জন লকের সম্পত্তি তত্ত্বের কিছু ত্রুটি বা সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও এ তত্ত্বটির যথেষ্ট গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। কারণ তাঁর এ তত্ত্বটি আধুনিককালে ইংরেজি ও ফরাসি সমাজতন্ত্রবাদীদের শ্রেণি দাবির ভিত্তি হিসেবে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া সমাজতাত্ত্বিক চিন্তাবিদদেরকে এটা গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।
জন লকের সম্পত্তি তত্ত্বের প্রভাব:
১. সম্পত্তি সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি : জন লক মনে করেন যে, প্রকৃতির রাজ্যেও মানুষের সম্পত্তির অধিকার ছিল কিন্তু তারা গ্রহণযোগ্য উপায়ে অর্জন এবং ব্যবহার করতে পারতো না। এ অবস্থা হতে মুক্তি পেতে এবং তাদের সম্পত্তি রক্ষার্থে তারা প্রকৃতির রাজ্য ছেড়ে সমাজ বা কমনওয়েথ গঠন করেছে। তাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো মানুষের সম্পত্তি রক্ষা করা। লকের এ ধারণা মানুষের মনে সম্পত্তির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে এবং মানুষ নিজেদের প্রয়োজনীয় সম্পত্তি রক্ষায় সরকারের উপর নির্ভরশীল হয়েছে। বর্তমান সময়েই আমরা লক্ষ করি যে, যে কোনো সরকার ব্যবস্থায় জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। সুতরাং বলা যায়, লকের সম্পত্তি তত্ত্ব জনগণের মধ্যে সম্পত্তি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের দায়িত্বশীলতাও বৃদ্ধি করেছে।
২. শ্রমের মর্যাদার স্বীকৃতি : জন লক ব্যক্তিগত সম্পত্তি অধিকারের সাথে শ্রমের যে সম্পর্ক নিরূপণ করেছেন তার ফলে সমাজে শ্রমের মর্যাদা স্বীকৃত হয়েছে। লকের মতে, প্রকৃতির রাজ্যে সকলেই সম্পত্তির অধিকারী হলেও ইচ্ছামতো কেউ তা ব্যবহার করতে পারবে না, বরং ব্যক্তির শ্রমের দ্বারা নির্ধারিত হবে তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ। পরবর্তী সময়ে লকের এ ধারণা সমাজতান্ত্রিকরা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। এছাড়া মানুষ শ্রমের উপর উৎসাহিত হয় এবং শ্রমের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
৩. সামাজিক শ্রেণিবিভাগের উদ্ভব : জন লকের সম্পত্তি তত্ত্ব পরবর্তী সময়ে সামাজিক শ্রেণি বিভক্তির সৃষ্টি করে। কেননা উৎপাদিত বস্তুর পরিমাণ দ্বারা শ্রমের মূল্য ও মর্যাদা নির্ধারিত হওয়ায় সমাজের কতিপয় মানুষ উন্নতির দিকে ধাবিত হয় এবং অধিকাংশ নিম্নস্তরে থেকে যায়। ফলে সমাজে ধনী গরিব, উঁচুনিচু শ্রেণিবিভেদ ঘটে।
৪. সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি : লকের সম্পত্তি তত্ত্বের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উৎপাদনের পরিমাপের ভিত্তিতে শ্রমিকের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা। ফলে মালিক শ্রেণি খুব সহজেই শ্রমিক শ্রেণিকে ঠকাতে পারে। নিম্ন মজুরি পাওয়ায় শ্রমিক শ্রেণি নিজের তেমন একটা উন্নয়ন ঘটাতে পারে না। সমাজের নিচু স্তরে তাদের বসবাস করতে হয়। সুতরাং দেখা যায় যে, জন লকের সম্পত্তি তত্ত্ব পরবর্তী সময়ে সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে।
৫. ব্যক্তিগত সম্পত্তি লাভের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি : লক শ্রমের দ্বারা অর্জিত সম্পত্তিকে বৈধ বলে ঘোষণা করায় সমাজের মানুষের মাঝে ব্যক্তিগত সম্পত্তি লকের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। এখানে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অর্জন করতে গিয়ে সমাজের মানুষের মাঝে বিরোধের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা হানাহানিতে লিপ্ত হয়।
উপসংহার :
উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, জন লকের সম্পত্তি তত্ত্বের কিছু ত্রুটি বা সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও এ তত্ত্বটির যথেষ্ট গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। কারণ তাঁর এ তত্ত্বটি আধুনিককালে ইংরেজ ও ফরাসি সমাজতন্ত্রবাদীদের শ্রেণি দাবির ভিত্তি হিসেবে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া সমাজতাত্ত্বিক চিন্তাবিদদেরকে এটা গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।