মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ব্যাখ্যা কর।

admin

 

ভূমিকা : বিচার বিভাগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। বিচার বিভাগ ব্যতীত সরকার ব্যবস্থা চলতে পারে না। আইনের ব্যবস্থা, সংবিধানের ব্যাখ্যা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এ কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন বিচার বিভাগ। এ দিক দিয়ে মার্কিন বিচার বিভাগকে স্বাধীন বলা যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ব্যাখ্যা কর।


বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : সাধারণ অর্থে আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগ তথা সকল প্রকার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব | এবং অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ হতে সম্পূর্ণ রূপে মুক্ত হয়ে বিচার বিভাগ যদি নিজস্ব বুদ্ধি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে | বিচার কার্যসম্পাদন করতে পারে তাকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা গণতন্ত্র রক্ষার অপরিহার্য শর্ত। বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ ও স্বাধীন না হলে ন্যায়বিচার আশা করা যায় না। বস্তুত জনগণের স্বাধীনতা নির্ভর করে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার উপর।


লর্ড ব্রাইসের (Lord Bryce) কথায় বলতে হয়, “কোন দেশের সরকারের কৃতিত্ব পরিমাপ করার সর্বোত্তম মাপকাঠি হচ্ছে তার বিচার বিভাগের দক্ষতা ও যোগ্যতা।”


বিচার বিভাগের স্বাধীনতার আরেকটি অর্থ হচ্ছে আদালতের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যথাযথভাবে কার্যকরী করতে বা মান্য করতে শাসন বিভাগ সর্বদাই বাধ্য থাকবে।


প্রকৃত প্রস্তাবে বিচারকগণ যখন বিচারের রায় প্রদানের ক্ষেত্রে সকল প্রকার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব এবং সরকারি কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ হতে মুক্ত থাকবেন তখনই কেবল বিচার বিভাগের সত্যিকার স্বাধীনতা রক্ষিত হবে।


অধ্যাপক গার্নার (Prof. Garner) তাই বলেছেন, "If the judges lack wisdom, probity and freedom of decision, the high purposes for which the judiciary is established can not be secured.""


সুতরাং বলা যায় যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে আমরা বুঝি, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ বা অন্য কোন বহিঃশক্তি বা তৃতীয় কোন শক্তির অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য সম্পাদন করা।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে বিচার বিভাগের প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো :


১. সংবিধানের চরম ব্যাখ্যাকর্তা : মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ব্যাখ্যাকর্তা। তার প্রদত্ত ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত। কিন্তু সে নিজের উদ্যোগে ব্যাখ্যার দায়িত্ব গ্রহণ করে না। কোন মামলার সাথে সংবিধানের ব্যাখ্যা সম্পর্কিত প্রশ্ন জড়িত থাকলেই সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অংশের ব্যাখ্যা করে। সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা সর্বজনীনভাবে বাধ্যতামূলক। সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানকে যেভাবে ব্যাখ্যা করে, সংবিধানের অর্থ সেভাবেই স্থিরীকৃত হয়। এজন্য বিচারপতি হিউজেস (Huges) মন্তব্য করেছেন, "We are under a constitution, but the constitution is what the judges say it is."


২. সংবিধান নিয়ন্ত্রণ : মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের অভিভাবক, রক্ষক ও ব্যাখ্যাদাতা হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। কংগ্রেস অথবা কোন অঙ্গরাজ্যের আইনসভা সংবিধান পরিপন্থি আইন তৈরি করলে অথবা প্রেসিডেন্ট সংবিধানের পরিপন্থি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এরূপ আইনকে সংবিধান বিরোধী বলে বাতিল করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে, যা মার্কিন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।


৩. সংবিধানের গতিশীলতা রক্ষা : সংবিধানের গতিশীলতা রক্ষার মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আদালতে পরিণত করেছে। আইন ও সংবিধানের ব্যাখ্যার মাধ্যমে সুপ্রিম সংবিধানের নমনীয়তা বজায় রাখে। পরিবর্তিত আর্থিক ও রাজনৈতিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে স সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন সংবিধানকে নমনীয় ও গতিশীল করে অ তুলেছে। সংবিধানের পরিবর্তন পদ্ধতির তথ্যগত জটিলতা সংবিধান ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতার একটি অ অন্যতম কারণ।


৪. আইনের ব্যাখ্যা : মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইনের ব্যাখ্যা করে। এটা আইনের অর্থ, উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি ব্যাখ্যা করে। এ ব্যাখ্যা সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয়। আইনের ব্যাখ্যা র দানের ক্ষমতা সম্পর্কে বিচারপতি C. J. Marshall বলেন, "It is emphatically the province and duty of the judicial department to say what the law is."



৫. বিভাগীয় পর্যালোচনার ক্ষমতা : মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বা অন্যতম ক্ষমতা হলো বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার ক্ষমতা। এ ক্ষমতা সংবিধান সুপ্রিম কোর্টকে সরাসরি দেয় নি। সংবিধান p ব্যাখ্যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট এ ক্ষমতা লাভ করেছে। বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা হলো কোন আইন সংবিধানের সাথে সংগতিপূর্ণ কিনা বা সংবিধানের পরিপন্থী কিনা তা যাচাই করে দেখা। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট কোন আইন সংবিধানের পরিপন্থি হলে তা বাতিল করে দিতে পারে। ১৮০৩ সনে Marbury vs 5 Madison মামলার প্রধান বিচারপতি C. J. Marshall কংগ্রেস - প্রণীত একটি আইন সংবিধানের পরিপন্থি বলে বাতিল করে দেয়। তখন থেকে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা চর্চা করে আসছে। আর এ ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেস প্রণীত বহু আইন বাতিল করে দিয়েছে।


প্রফেসর H. J. Abrahamn বলেন, "Judicial review means the power of any court to hold unconstitutional and unenforceable any law, any official actions based upon it, any illegal action based upon it and any illegal action by a public official that it deems to be conflict with the basic law in the United States and its constitution. "


৬. নাগরিক অধিকার রক্ষা : মার্কিন বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো মার্কিন নাগরিকদের অধিকার সংরক্ষণ। মার্কিন সরকার বা অন্য কেউ কোন নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করলে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে তার প্রতিকার পেতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন রিট জারি করতে পারে। এগুলো হলো Mandamus, Injunction, Hebius Corpus Que warrento, Certiorari ইত্যাদি। মার্কিন ইতিহাসে নিগ্রোদের অধিকার সংরক্ষণে বিচার বিভাগের ভূমিকা অনবদ্য। মার্কিন কংগ্রেসের কোন আইন বা কোন অঙ্গরাজ্যের কোন আইন নাগরিক অধিকার পরিপন্থি হলে বিচার বিভাগ তা বাতিল করে দিতে পারে। মার্কিন সংবিধান বলেছে, "No person would be deprived of life, liberty or property without due process of law."


৭. যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালত হিসেবে কাজ : মার্কিন বিচার বিভাগ তথা সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র ও অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে বিবাদ- বিসংবাদ মীমাংসা করে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল এটাই। মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকার এবং কোন অঙ্গরাজ্যের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে বিরোধ হলে অথবা একটি অঙ্গরাজ্যের সাথে অন্য অঙ্গরাজ্যের বিবাদ হলে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী নিষ্পত্তি করে। সুপ্রিম কোর্টের রুলিং কেন্দ্র-ও অঙ্গরাজ্যের উভয় সরকারই মেনে নিতে বাধ্য। সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যায় মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আবার অঙ্গরাজ্যের আইনসভার চেয়ে কংগ্রেসের ক্ষমতা বেড়েছে এক্ষেত্রে Melulork vs Marryland Gibbons vs Ogden এর মামলা উল্লেখযোগ্য।


৮. সংবিধানের রক্ষক : সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন সংবিধানের রক্ষক হিসেবে কাজ করে। মার্কিন সরকার এবং ভার অঙ্গরাজ্যগুলো সংবিধান অনুযায়ী কাজ করে কিনা তা সুপ্রিম কোর্ট লক্ষ রাখে। কেউ সংবিধানবিরোধী কাজ করলে বিচার বিভাগ বা সুপ্রীম কোর্ট তা বাতিল করে দিতে পারে। প্রফেসর Wheare বলেন, "The last word about the meaning of the constitution and consequently of the division of powers with a body, the supreme court.” মার্কিন সরকারের অপর বিভাগগুলোর উপর বিচার বিভাগের প্রাধান্য সুস্পষ্ট।


Dr. Finer বলেন, "The courts are superior to the judgement's of all other institutions including congress" বস্তুত বিগত দু'শো বছরে সুপ্রিম কোর্টের উপর অনেক বাধা-বিপত্তি এসেছে। রাষ্ট্রপতি Roosevelt ক্ষুব্ধ হয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংস্কার করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু পারেন নি। সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে তার ভূমিকা অক্ষুণ্ণ রেখেছে। Dr. Appadorai, "It has acted as the guardian of the constitution to protect the rights of the state against the invention by the centre and vice versa."


৯. আইন তৈরি করা : সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ কোন কোন ক্ষেত্রে আইন তৈরি করে। অনেক দেশের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে বিচারকগণ নিজস্ব বিবেক, বুদ্ধি ও নায়বোধের উপর নির্ভর করে বিচার প্রক্রিয়া সম্পাদন করেন। আবার যেসব ক্ষেত্রে আইন সুস্পষ্ট নয়, সেসব ক্ষেত্রে বিচারকগণ নিজস্ব ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিচারকার্য সম্পাদন করেন। পরবর্তীকালে অনুরূপ মামলায় বিচারকগণ পূর্ববর্তী মামলার রায়কে আইন হিসেবে ধরে নেন। এভাবে বিচারকগণ আইন সৃষ্টি করেন। একে বলে বিচারক প্রণীত আইন।


১০. নীতি নির্ধারণ: সুপ্রিম কোর্ট নীতিনির্ধারণেও ভূমিকা পালন করে। আইনের ব্যাখ্যা, শাসন বিভাগের আদেশ-নির্দেশ ও আইনের বৈধতা বিচারের মাধ্যমে এ কার্যসম্পাদন করে। শাসন বিভাগের আদেশ বা আইন বিভাগের প্রণীত আইন সংশোধনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে দেয়। এ ভাবে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ের মাধ্যমে নীতিনির্ধারণে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের জন্য আলাদা শিক্ষার ব্যবস্থা প্রবর্তন এর দাবি বাতিল করে দিয়েছে। অশ্লীল চিত্র ও সাহিত্যকর্ম বাতিল করে দিয়েছে। তাছাড়া নারী- পুরুষ বৈষম্য, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সম্পর্কে ও সুপ্রিম কোর্ট ন্যায়সঙ্গত মতামত প্রদান করেছে।


১১. সংবিধানের পতিশীলতা রক্ষা করা : সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের গতিশীলতা রক্ষা করেছে। মার্কিন সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। একে সহজে পরিবর্তন করা যায় না। কারণ এটা সহজসাধ্য নয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্ট এগিয়ে এসেছে। সংবিধানের অনুমিত ক্ষমতার ব্যাখ্যার মাধ্যমে মার্কিন সংবিধানের জটিলতা রোধ করে বিচার বিভাগ বা সুপ্রিম কোর্ট এটাকে গতিশীল করেছে। এজন্য মার্কিন সংবিধান পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। ফলে এর জটিলতা রাজনৈতিক উন্নয়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় নি। S. E. Finer তাই বলেন, "The supreme court has been able, albeit at a distance to keep the interpretation of the constitution in tune with broad current of political thought and presumptions."


১২. মৌলিক অধিকার রক্ষা : সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট প্র বিভিন্ন রিট জারি করতে পারে। নিগ্রোদের অধিকার সংরক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা অনবদ্য।


১৩. রাজনৈতিক বিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা : সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তি করে। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট সে মে দেশের দল, বর্ণ, ধর্ম ও সম্প্রদায়গত বিরোধ দূর করতে কাজ করে। সুপ্রিম কোর্টের রায় নিগ্রোদের বিরুদ্ধে বৈষম্য দূরীকরণে ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করেছে।


১৪. গণতন্ত্র সংরক্ষণ : মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গণতন্ত্র সংরক্ষণে কাজ করে। এটা সেদেশের জনগণের অধিকার ও f স্বাধীনতা রক্ষার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংরক্ষণ করে। ce সুপ্রিম কোর্টের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে রাষ্ট্রপতি স্বৈরশাসকে পরিণত হতে পারে না। বস্তুত মার্কিন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংরক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা প্রশ্নাতীত।


১৫. শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ : মার্কিন শাসন বিভাগকে সুপ্রিম কোর্ট তার বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা দ্বারা শাসন বিভাগের যে কোন আদেশ নির্দেশ সংবিধান পরিপন্থি হলে তা বাতিল করতে পারে। এদিক দিয়ে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টকে অন্যতম শক্তিশালী আদালতে পরিণত করেছে।


১৬. সংবিধানকে আধুনিকীকরণে সাহায্য করা : সংবিধানের গতিশীল চরিত্র বজায় রাখার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক সংশোধনের তুলনায় সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা আরও বেশি 3 গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত রাজনৈতিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক | পরিস্থিতির সাথে সংগতি বজায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানকে র পরিবর্তনশীল ও গতিশীল হতে সাহায্য করেছে। এককথায় বলা যায়, সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন সংবিধানকে আধুনিকীকরণে সাহায্য করেছে। S. E. Finer মন্তব্য করেছেন যে, “সংবিধান ড পরিবর্তনের সমস্যাই হলো প্রধান সমস্যা। বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সংবিধানের সংগতি বিধানের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।”


১৭. ন্যায়বোধের নীতি : সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায়বোধের উন্নতি সাধন করেছে। এ ন্যায়বোধ আইনের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং এর থেকে ব্যক্তি তার ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের নিশ্চয়তা পায়।


১৮. অঙ্গরাজ্যগুলোর অধিকার সংরক্ষণ : কেন্দ্রীয় সরকার যাতে অঙ্গরাজ্যগুলোর শাসনব্যবস্থার কাজে হস্তক্ষেপ না করতে পারে, সে বিধানও সংবিধানের আছে। অঙ্গরাজ্যগুলোর এ অধিকার সংরক্ষণের ব্যাপারে মার্কিন বিচার বিভাগ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।


১৯. রাজনৈতিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন : রাজনৈতিক ব্যবস্থা বাস্তবায়নেও মার্কিন বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যেমন- ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ ও ভারসাম্য নীতির সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে। সুপ্রিম কোর্ট এদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করেছে।


উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়। যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বিচার বিভাগ ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। কেননা সুপ্রিম কোর্ট মার্কিন সংবিধানের প্রকৃত অভিভাবকে পরিণত হয়েছে। তাই বলা যায় | মার্কিন বিচার বিভাগ স্বাধীন ও স্বতন্ত্র।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!