১. ভৌগোলিক অবস্থান : ইতালির টাইবার নদীর তীরে রোমান নামক সভ্যতার গোড়াপত্তন ঘটেছিল গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণযুগ শেষ হওয়ার আগেই। ভূমধ্যসাগরের মধ্যে অঞ্চলে এ্যাপেনাইন উপদ্বীপ তথা ইতালির উপদ্বীপকে আশ্রয় করেই এ সভ্যতার উদয় ঘটেছিল। এটিই ইতিহাসে রোমান সভ্যতা নামে পরিচিত ।
২. পূর্ব পুরুষ : প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ অনুযায়ী উচ্চ পুরোপলীয় যুগের মানুষ ইটালি অঞ্চলে বসবাস করত। সম্ভবত প্রাচীনতম কালে ক্রোমেনিয়ন মানুষের বংশ ধররা বসতি গড়ে তুলেছিল। বোঞ্জ যুগে আলপসের উত্তর পার্বত্যাঞ্চল থেকে সর্ব প্রথম ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর জনগণের আগমন ঘটে। ধারণা করা হয় এই ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীয় তাদের পূর্ব পুরুষ ।
৩. শহর ও ঘরবাড়ি : টাইবার নদীর উত্তর ও দক্ষিণে এরা বসতি গড়ে তুলেছিল। তাদের শহর ছিল পাহাড়ের উপর। শহরগুলো ছিল দেয়াল দ্বারা ঘেরা এবং এক পাশে থাকত সমাধি ক্ষেত্র। আধুনিক ইতালীয় রীতিতেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।
৪. লিখন পদ্ধতি : গ্রিক বর্ণমালার উপর ভিত্তি করে রোমানরা একটি নিজস্ব বর্ণনারীতি গড়ে তুলেছিল। কিন্তু তাদের লিপির যথেষ্ট নমুনা আবিষ্কৃত হয়নি এবং তার পূর্ণাঙ্গ পাঠোদ্ধারও সম্ভব হয়নি।
৫. সরকার ব্যবস্থা : রোমান সরকার ব্যবস্থা দুটি কার্যকারি পরিষদ ছিল। যথা- সিনেট সভা ও জনগণের পরিষদ। এই পরিষদ রাজাকে সহায়তা দান করতো। সিনেটের সদস্যরা অভিজাতদের থেকে নির্বাচিত করা হতো। রাজা একাধারে সামরিক, ধর্মীয় ও আইনের ক্ষেত্রে প্রধান ছিলেন।
৬. সামাজিক জীবন : রোমান সামাজিক জীবনে শ্রেণি বিভাগ ছিল। রোমানদের প্রধান পেশা ছিল কৃষি। কৃষিতে প্রথার অস্তিত্ব ছিল। ভূস্বামীরা এই দাসদের দিয়ে তাদের জমি চাষ ও ফসল উৎপাদন করাত। যুদ্ধ আর বিপ্লবে ব্যস্ত থাকায় সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের কোনো উন্নয়ন সাধন ঘটেনি।
৭. অর্থনৈতিক জীবন : রোমানরা কৃষির পাশাপাশি তারা বাণিজ্য ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। রোমান কারিগর, কৃষিজীবী, পেশাজীবীদের সমন্বয়ে একটি গিল্ড তৈরী করত। এই সময় সমাজে ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরী গড়ে ওঠেছিল।
৮. সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবন : রোমান সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। গ্রিক ও রোমানদের সাংস্কৃতির উৎস অভিন্ন থাকায় এই যুগে রোমান ধর্মে গ্রিক ধর্মের ছায়াই খুঁজে পাওয়া যায়। রোমান দেবতাদের মধ্যে গ্রিক দেবতাদের প্রতি মূর্তিই প্রতিফলিত হয়েছে।
৯. শিল্পের বিকাশ : রোমান সমাজে শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। তারা শিল্প কারখানা মাধ্যমে রোমের অর্থনীতিকে আরো বেশী সুদূরপ্রসারী করেছিল। তারা এই সকল শিল্প কারখানায় বস্ত্র, আসবাবপত্র, যুদ্ধাস্ত্র, বোঞ্জ ও লৌহজাত দ্রব্য তৈরি করত।