মানব সভ্যতায় রোমানদের অবদান মূল্যায়ন কর।

admin

ভূমিকা : গ্রিক সভ্যতা যখন উন্নতির চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল ঠিক সেই সময়ে রোমান সভ্যতায় যাত্রা শুরু হয়। রোমানরা তাদের সভ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছিল। অগাস্টাস সীজারের সময় কাল থেকে রোমানরা অনেক বেশী উন্নতি লাভ করতে থাকে। এই সময় তারা স্থাপত্য অনেক বেশী সাফল্য অর্জন করতে থাকে। এই সময় থেকে রোমান সভ্যতা উন্নতির চরম পর্যায়ে উপনীত হতে থাকে। এই সময় অর্থাৎ অগাস্টাসের সময় কালকে রোমান সভ্যতায় স্বর্ণযুগ হিসেবে গণ্য করা হয়।


মানব সভ্যতায় রোমানদের অবদান মূল্যায়ন কর।


মানব সভ্যতায় রোমানদের অবদান : রোমানদের সভ্যতা বিকাশে মানব সভ্যতায় যে অবদান রেখেছিল তা নিম্নে আলোচনা করা হলো -


১. আইন প্রণয়ন : মানব সভ্যতা বিকাশে রোমানদের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল আইন তৈরিতে। সম্রাট অগাস্টাস পূর্ববর্তী আইনকে সংস্কার সাধন করে একটি বাস্তব ভিত্তিক আইন প্রণয়ন করেন। তিনি আইনের সাম্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

কিভাবে সুইপার সোশ্যাল ( Swiper social) যুক্ত হয়ে টাকা ইনকাম করবেন

২. রোমান স্থাপত্য : রোমান স্থাপত্য শিল্পে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছিল। তারা তাদের স্থাপনাগুলোকে অনেক বেশী জাঁকজমকপূর্ণ রূপ দিয়ে ছিলেন। প্রাসাদ দালানগুলো ছিল খুবই চমৎকারপূর্ণ। রোমে আবিষ্কৃত কংক্রীট স্থাপত্য ছিল তাদের নতুন অবদান। তারা সুন্দর সুন্দর মন্দির, গির্জা, মঠ, থিয়েটার স্নানাগার প্রভৃতি স্থাপনা তৈরী করেছিলেন।


৩. রোমান ভাস্কর্য : রোমানদের ভাস্কর্য শিল্পে তেমন বেশী উন্নতি সাধন হয়নি। তবুও তারা ভাস্কর্য শিল্পে একেবারে পিছিয়ে ছিল না। তারা ভাস্কর্য হিসেবে দেবতা, রাজা ও উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের প্রস্তর মূর্তি বিশেষ করে আবক্ষ প্রস্তর মূর্তি তৈরি করত।


৪. রোমান সাহিত্য : রোমান সাহিত্যে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল। রোমের মানব সভ্যতা বিকাশে এই সকল সাহিত্য অভাবনীয় গুরুত্ব বহন করে। রোমান সাহিত্যিকরা খ্যাতিমান অর্জন করেছিলেন তাদের সাহিত্য রচনা করার জন্য। যেমন সুবিখ্যাত কবি ভার্জিলের “ইনিড” ও ইতিহাসবেত্তা লিভির “ রোমান ইতিহাস" রোমান সাম্রাজ্যকে আরো বেশী বেগবান করেছিল।


৫. রোমান বিজ্ঞান : বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকদের জন্ম ঘটেছিল রোম ও ইতালিতে এই বিজ্ঞানীদের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ছিল রোম বাসীদের জন্য অর্থাৎ রোম সভ্যতার সাফল্যের চাবিকাঠি। বিজ্ঞানের মধ্যে যে কয়জন ব্যক্তিত্বের সন্ধান মেলে তাদের মধ্যে আদর্শস্থানীয় ছিলেন "বড়পিনি”। ৭৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি কয়েকখণ্ড বিজ্ঞান বিষয়ক বিশ্বকোষ তৈরি করেন। আরো বিজ্ঞান ক্ষেত্রে যাদের অবদান রেখেছিলেন তারা হলেন গ্যালেন, সোরানাস, রুফাস ওসেলসাস প্রমুখ।


৪. ভাষাগত উন্নয়ন : অগাস্টাস সীজারের সময় রোমে ল্যাটিন ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ ঘটে এবং উন্নতি সাধিত হয়। ল্যাটিন ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়। ফলে সমগ্র রোমের অধিবাসীদের এ ভাষা চর্চা করতে হয়।


৭. ব্যবসা-বাণিজ্য : ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রোমানরা সবচেয়ে বেশী অগ্রগণ্য ছিল। তারা বাণিজ্যের জন্য ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছিল। ভারত থেকে তারা মসলা, দামি পাথর, চন্দন কাঠ ও চীন থেকে রেশমী কাপর আমদানি করত।


৮. রোমান ধর্ম : রোমানদের ধর্মে গ্রিকদের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। রোমানদের প্রধান দেবতার নাম জুপিটার। এছাড়াও নেপচুন, মিনার্ভা ও ভেনাস রোমানদের অন্যতম দেবী হিসেবে পরিগণিত ছিল। রোমানরা ঈশ্বর হিসাবে সম্রাটকে পূজা করত ।


উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রোমান সভ্যতা শিল্প, সাহিত্য, জ্ঞান বিজ্ঞানের অনেক বেশী পারদর্শী ছিল। তাদের সভ্যতা বিকাশে রোমান বিজ্ঞানী সাহিত্যিকদের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশী। তাই বলা যায় ভাষা বর্ণমালা ধর্ম, দর্শন শিক্ষা, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, সাহিত্য ইত্যাদির প্রতিটি ক্ষেত্রে রোমানরা এক অভূতপূর্ব অবদান রেখে গেছে।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!