শিক্ষণ কি? শিক্ষণের প্রকারভেদ উদাহরণসহ আলোচনা কর।

admin

ভূমিকা :

শিক্ষণ হল একটি Concept (ধারণা) যা পর্যবেক্ষণযোগ্য ঘটনা থেকে অনুমিত হয়। এটি একটি মৌল প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তি নতুন কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়। এটি হঠাৎ করে অর্জিত হয় না। অনেক সময় ধরে আমরা যা শিখি। এবং অনেক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা যে দক্ষতা অর্জন করি তাকে শিক্ষণ বলে। সাধারণত অভিজ্ঞতা ও অনুশীলনের ফলে শিক্ষণ দ্রুত সম্পন্ন হয়। কারণ অভিজ্ঞতার সাহায্যে প্রাণী শিক্ষণের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করে আর অনুশীলনের সাহায্যে প্রাণী প্রতিক্রিয়া করতে সক্ষম হয়। সুতরাং বলা যায় যে, কোন সূক্ষ্ম দক্ষতা বারবার চর্চা করে যখন আমরা তাকে কার্যে পরিণত করি এবং অতীত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যখন নতুন বিষয় আরম্ভ করি তখন তাকে শিক্ষণ বলে।


শিক্ষণ কি? শিক্ষণের প্রকারভেদ উদাহরণসহ আলোচনা কর।


শিক্ষণের শ্রেণীবিভাগ : শিক্ষণ প্রধানত দু'প্রকার। যথা :

১. অনুষজ্ঞ শিক্ষণ এবং

2. জ্ঞান শিক্ষণ

 

১. অনুষঙ্গ শিক্ষণ : যে শিক্ষণ নৈকট্যের জন্য হচ্ছে বা হয় তাকে Associative learning (অনুষঙ্গ শিক্ষণ) বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যেখানে দু'টি উদ্দীপক থাকে অথবা একটি উদ্দীপক ও একটি প্রতিক্রিয়া থাকে তাকে Associative learning বলে। আবার Stimulus (উদ্দীপক) দ্বারা যখন কোন শিক্ষণ হয় তখন তাকে Associative learning বলে।


ক. সাপেক্ষ শিক্ষণ : এখানে আমরা সাধারণত Associative learning (অনুসঙ্গ শিক্ষণ) শিখে থাকি। এটা প্রাণীকে তার পরিবেশের সহিত নিজেকে খাপখাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং এটা প্রাণী তথা মানুষের যে কোন আচরণের ব্যাখ্যা দিতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে প্রাণী বাস্তবভাবে Conditioned stimulus এবং Unconditioned stimulus এর মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করতে শেখে। দু'টি উদ্দীপকের মধ্যে যে সংযোগ স্থাপিত হয় সেগুলোকে ভালোভাবে বর্ণনা করাই হল Classical conditioning

  1. অন্তদৃষ্টিমূলক শিক্ষণ
  2. পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষণ
  3. সুপ্ত শিক্ষণ

১. অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণ : যখন আমরা কোন একটি সমস্যায় থাকি এবং সে সমস্যাটির সমাধান যদি হঠাৎ করেই মাথায় চলে আসে তখন তাকে Insightful learning বলে।

Koller পরীক্ষা করেছেন যে, তিনি একটি ঘরে আঠাযুক্ত কতকগুলো খালি বাক্স রেখেছেন এবং উপরে একটি কলার ছড়া জানিয়ে রেখে ঘরের মধ্যে একটি ক্ষুধার্ত শিম্পাঞ্জি ছেড়ে দেওয়া হল। ফলে শিম্পাঞ্জি তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য বিভিন্ন রকম আচরণ করতে লাগল। এক সময় শিম্পাঞ্জিটি লক্ষ্য করল যে, একটা বাক্সের সাথে আরেকটি বাক্স লেগে আছে এবং সে কয়েকটা বাক্স একসাথে লাগিয়ে বাক্সের উপরে উঠে কলা খেতে সক্ষম হয়। এতে সে ক্ষুধা নিবারণ করতে পেরেছে। শিম্পাঞ্জির মাথায় হঠাৎ (কলা খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করা) যে সমাধানযোগ্য বুদ্ধি এসেছে তাকেই বলে Insightful learning বা অন্তদৃষ্টিমূলক শিক্ষণ। অন্ত মুষ্টিমূলক শিক্ষণের দু'টি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। তা নিম্নরূপ :


১ম: অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণে প্রাণীকে একটি সমস্যার সম্মুখীন করা হয় এবং অনেক্ষণ পর্যন্ত সমস্যাটির কোন সমাধান হয় না, অর্থাৎ, সমস্যার সমাধানে কোন অগ্রগতি হয় না, তারপর এক সময় হঠাৎ করে সমাধান উপস্থিত হয়।

 

২য়: অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, কোন পরিস্থিতিতে প্রাণী অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করলে তা একই ধরনের বহুসংখ্যক পরিস্থিতিতে সামান্যীকরণ হয় (Morgan and king, 1975)।

 

২. পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষণ : পর্যবেক্ষণ বলতে বুঝায় অন্যের থেকে অনুসরণ। সাধারণত বেশিরভাগ শিক্ষণ যখন আমরা শিখি সেক্ষেত্রে আমরা অন্যদের থেকে পর্যবেক্ষণ করে যাদের আচরণ আমাদের ভালো লাগছে তাদের আচরণ আমরা গ্রহণ করছি। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যে শিক্ষণ হচ্ছে তাকেই পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষণ বলে। পর্যবেক্ষণমূলক এ শিক্ষণটি চারটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। নিম্নে ধাপ চারটি আলোচিত হল :


প্রথম ধাপ : মনোযোগ যে আচরণটি আমরা শিক্ষণ করব তার প্রতি প্রথমেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। যেমন- কোন একজন অভিনেতার অভিনয় আমার ভালো লাগে এবং আমি এ অভিনয়টা শিখতে চাই। এতে করে প্রথমেই আমাকে ঐ অভিনেতার অভিনয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে এবং মনোযোগের সাথে প্রত্যক্ষণ করতে হবে।


দ্বিতীয় ধাপ : আচরণ মনে রাখার চেষ্টা কোন আচরণ মনোযোগ দিয়ে প্রত্যক্ষণ করার পর তা মনে রাখার চেষ্টা করতে হয়। অর্থাৎ, অভিনেতার কথা বলা, হাসা, কাঁদা, মুখভঙ্গি ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় মনোযোগের সাথে স্মরণ রাখতে হবে।


তৃতীয় ধাপ : আচরণকে পুনরুৎপাদন করার চেষ্টা : আচরণটি মনে রাখলেই চলবে না, বরং সে কিভাবে সেটা করে তা পুনরুৎপাদনের চেষ্টা করতে হবে। এতে করে বিষয়টি বা আচরণটি মনের মধ্যে সঠিকভাবে তৈরি হয়ে থাকে এবং বিষয়টিকে সহজেই রপ্ত করা হচ্ছে।


চতুর্থ ধাপ : প্রভাবিত হওয়া : যখন ব্যক্তি তার ভালোলাগা আচরণ রপ্ত করে তখন সে ঐ আচরণের মাধ্যমেই প্রভাবিত হয় এবং সে ঐ আচরণকে তার নিজস্ব আচরণে পরিণত করে। যেমন- অভিনেতার আচরণ বা অভিনয় করার দক্ষতা ও আয়ত্ত করার পর তা নিজস্ব আচরণের সাথে যুক্ত করে নিজস্ব আচরণে পরিণত করে ফেলে অর্থাৎ বলা যায় যে, ঐ অভিনেতার মত অভিনয় করতে শিখে ফেলেছে এবং পরবর্তীতে সে ঠিক ঐ একইভাবে অভিনয় করে থাকে।


ii. সুপ্ত শিক্ষণ : Latent learning হল এমন একটি শিক্ষণ প্রক্রিয়া যাতে প্রাণী একটি নতুন শিক্ষণ আয়ত্ত করে। কিন্তু এর জন্য যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন Reinforcement বা পুরস্কার দেওয়া হয় ততক্ষণ প্রাণী এটা প্রকাশ করে না। যদিও প্রাণী এ ধরনের শিক্ষণ মনের অজান্তেই আয়ত্ত করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাণী বা ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বুঝতে পারে না যে এমন ধরনের একটি নতুন শিক্ষণ সে আয়ত্ত করে ফেলেছে। যেমন- একজন ছাত্র তার বাবার সাথে বাড়ি থেকে প্রথম দিনে প্রথম বারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। সে তার বাবার সাথে সাথে ডান বাম দেখেশুনে আসছে। কারণ তার বাবা তার সাথে প্রত্যেকদিন আসবেন না। তার বাবাও তাকে সবকিছু দেখেশুনে শিখিয়ে দিচ্ছেন। কারণ তার কাছে সবকিছু অপরিচিত। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশের দোকান, গাছপালা কিংবা অন্যান্য আরও কিছু দেখে পথ মনে রাখার চেষ্টা করছে। এতে করে তার মাথায় স্বাভাবিকভাবে একটি Mental Map তৈরি হয়ে যাবে। এরপর দেখা গেল যে, সে নিয়মিত ক্লাসে আসছে। সবকিছু তার কাছে চেনা।


খ. করণ শিক্ষণ : আমাদের মানসিক প্রতিচ্ছবিকে জড়িয়ে যে আচরণ কাজ করছে তাই Operant conditioning। মানুষ ও প্রানীর শিক্ষণের জন্য Operant conditioning form অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। Thorndike ১৯৩২ সালে Operant Conditioning আবিষ্কার করেন। তিনি বলেছেন, “যেসব আচরণ আমাদেরকে সন্তুষ্টি দান করে তথাপি পুরস্কার প্রদান করে, পরবর্তীতে আমরা সেসব পুনরায় আরও বেশি ভালোভাবে করার চেষ্টা করি। কিন্তু যেগুলোর মাধ্যমে আমরা সন্তুষ্টি লাভ করতে পারি না পরবর্তীতে সেগুলো পুনরায় করার চেষ্টা করি না।” তাঁর এ বক্তব্যকে বলা হয় The law of effect Operant Conditioning এর মূলকথা হল Behaviour is influenced by its consequence. Consequence (ফলাফল) দু' রকম হতে পারে। যথা :


i. ইতিবাচক ফলাফল: এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আচরণের শক্তি বৃদ্ধি পায় তথা যা আচরণকে শক্তিশালী করে। আমরা যদি কোন কাজ করে সফলতা লাভ করি তবে তাকে বলে Positive consequence। এর মাধ্যমে আমাদের আচরণ বেশি। শক্তিশালী হয় ।


ii. নেতিবাচক ফলাফল : এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা আমাদের আচরণকে শক্তিশালী না করে দুর্বল করে তোলে। কোন কাজ করে আমরা যদি সফলতা লাভ করতে না পেরে ব্যর্থ হই যা আমাদের সন্তুষ্টি দেয় না তবে তাকে Negative consequence বলে।


২. জ্ঞান শিক্ষণ : পরিবেশের সাথে মানসিক প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করে যখন আমরা কিছু শিখে থাকি, তখন তাকে Cognitive learning বলে। Cognitive learning কে এজন্য এ নামে নামকরণ করা হয়েছে যেহেতু এটা পরিবেশ সম্পর্কে তথ্যগুলোকে নির্দিষ্টভাবে Process করে থাকে, যে তথ্যগুলো ইন্দ্রিয়ের নিকট স্বীকৃত হয়। এর অন্য নাম হল Preceptual learning. এ ধরনের শিক্ষণে সাধারণত প্রত্যক্ষণের মাধ্যমে পরিবর্তন সাধিত হয়। কোন স্থানে বারবার না গিয়ে শুধুমাত্র একবার যাওয়ার ফলেই সে স্থান সম্পর্কে অবগত হওয়া, যেমন- মসজিদ, বাজার, দোকান ইত্যাদি।


Cognitive মনোবিজ্ঞানীগণ বলেছেন যে, শিক্ষণের জন্য আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল Higher mental process: (উচ্চতর মানসিক প্রক্রিয়া)। তাঁরা সাধারণত কোন পরিস্থিতির ব্যাপারে Organism এর সতর্কতার উপর দৃষ্টি দিয়ে থাকেন এবং শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় তার ফলপ্রস দেখেন। Cognitive provess ৬টি প্রধান বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে। যথা :


i. The selection of information.

ii. The making of alteration in the selected information.

iii. The association of times of information with each other.

iv. The elaboration of information in thought.

V. The storage of information in memory.

vi. The retrieval of stored information.


i. অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণ : যখন আমরা কোন একটি সমস্যায় থাকি এবং সে সমস্যাটির সমাধান যদি হঠাৎ করেই মাথায় চলে আসে তখন তাকে Insightful learning বলে।

Koller পরীক্ষা করেছেন যে, তিনি একটি ঘরে আঠাযুক্ত কতকগুলো খালি বাক্স রেখেছেন এবং উপরে একটি কলার ছড়া টানিয়ে রেখে ঘরের মধ্যে একটি ক্ষুধার্ত শিম্পাঞ্জি ছেড়ে দেওয়া হল। ফলে শিম্পাঞ্জি তার ক্ষুধা নিবারণের জন্য বিভিন্ন রকম আচরণ করতে লাগল। এক সময় শিম্পাঞ্জিটি লক্ষ্য করল যে, একটা বাক্সের সাথে আরেকটি বাক্স লেগে আছে এবং সে কয়েকটা বাক্স একসাথে লাগিয়ে বাক্সের উপরে উঠে কলা খেতে সক্ষম হয়। এতে সে ক্ষুধা নিবারণ করতে পেরেছে। শিম্পাঞ্জির মাথায় হঠাৎ (কলা খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করা) যে সমাধানযোগ্য বুদ্ধি এসেছে তাকেই বলে Insightful learning বা অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণ। অন্ত দৃষ্টিমূলক শিক্ষণের দু'টি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। তা নিম্নরূপ :


১ম : অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণে প্রাণীকে একটি সমস্যার সম্মুখীন করা হয় এবং অনেক্ষণ পর্যন্ত সমস্যাটির কোন সমাধান হয় না অর্থাৎ, সমস্যার সমাধানে কোন অগ্রগতি হয় না, তারপর এক সময় হঠাৎ করে সমাধান উপস্থিত হয়।

 

২য় : অন্তর্দৃষ্টিমূলক শিক্ষণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, কোন পরিস্থিতিতে প্রাণী অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করলে তা একই ধরনের বহুসংখ্যক পরিস্থিতিতে সামান্যীকরণ হয় (Morgan and king, 1975)।

 

ii. পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষণ : পর্যবেক্ষণ বলতে বুঝায় অন্যের থেকে অনুসরণ। সাধারণত বেশিরভাগ শিক্ষণ যখন আমরা শিখি সেক্ষেত্রে আমরা অন্যদের থেকে পর্যবেক্ষণ করে যাদের আচরণ আমাদের ভালো লাগছে তাদের আচরণ আমরা গ্রহণ করছি। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যে শিক্ষণ হচ্ছে তাকেই পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষণ বলে। পর্যবেক্ষণমূলক এ শিক্ষণটি চারটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে।


নিম্নে ধাপ চারটি আলোচিত হল :

প্রথম ধাপ : মনোযোগ : যে আচরণটি আমরা শিক্ষণ করব তার প্রতি প্রথমেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। যেমন- কোন একজন অভিনেতার অভিনয় আমার ভালো লাগে এবং আমি এ অভিনয়টা শিখতে চাই। এতে করে প্রথমেই আমাকে ঐ অভিনেতার অভিনয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে এবং মনোযোগের সাথে প্রত্যক্ষণ করতে হবে।


দ্বিতীয় ধাপ : আচরণ মনে রাখার চেষ্টা : কোন আচরণ মনোযোগ দিয়ে প্রত্যক্ষণ করার পর তা মনে রাখার চেষ্টা করতে হয়।। অর্থাৎ, অভিনেতার কথা বলা, হাসা, কাঁদা, মুখভঙ্গি ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় মনোযোগের সাথে স্মরণ রাখতে হবে।


তৃতীয় ধাপ : আচরণকে পুনরুৎপাদন করার চেষ্টা : আচরণটি মনে রাখলেই চলবে না, বরং সে কিভাবে সেটা করে তা পুনরুৎপাদনের চেষ্টা করতে হবে। এতে করে বিষয়টি বা আচরণটি মনের মধ্যে সঠিকভাবে তৈরি হয়ে থাকে এবং বিষয়টিকে সহজেই রপ্ত করা হচ্ছে।


চতুর্থ ধাপ : প্রভাবিত হওয়া : যখন ব্যক্তি তার ভালোলাগা আচরণ রপ্ত করে তখন সে ঐ আচরণের মাধ্যমেই প্রভাবিত হয় এবং সে ঐ আচরণকে তার নিজস্ব আচরণে পরিণত করে। যেমন- অভিনেতার আচরণ বা অভিনয় করার দক্ষতা ও আয়ত্ত করার পর তা নিজস্ব আচরণের সাথে যুক্ত করে নিজস্ব আচরণে পরিণত করে ফেলে অর্থাৎ বলা যায় যে, ঐ অভিনেতার মত অভিনয় করতে শিখে ফেলেছে এবং পরবর্তীতে সে ঠিক ঐ একইভাবে অভিনয় করে থাকে।


iii. সুপ্ত শিক্ষণ : Latent learning হল এমন একটি শিক্ষণ প্রক্রিয়া যাতে প্রাণী একটি নতুন শিক্ষণ আয়ত্ত করে। কিন্তু এর জন্য যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন Reinforcement বা পুরস্কার দেওয়া হয় ততক্ষণ প্রাণী এটা প্রকাশ করে না। যদিও প্রাণী এ ধরনের শিক্ষণ মনের অজান্তেই আয়ত্ত করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাণী বা ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় ছাড়া বুঝতে পারে না যে এমন ধরনের একটি নতুন শিক্ষণ সে আয়ত্ত করে ফেলেছে। যেমন- একজন ছাত্র তার বাবার সাথে বাড়ি থেকে প্রথম দিনে প্রথম বারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। সে তার বাবার সাথে সাথে ডান বাম দেখেশুনে আসছে। কারণ তার বাবা তার সাথে প্রত্যেকদিন আসবেন না। তার বাবাও তাকে সবকিছু দেখেশুনে শিখিয়ে দিচ্ছেন। কারণ তার কাছে সবকিছু অপরিচিত। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশের দোকান, গাছপালা কিংবা অন্যান্য আরও কিছু দেখে পথ মনে রাখার চেষ্টা করছে। এতে করে তার মাথায় স্বাভাবিকভাবে একটি Mental Map তৈরি হয়ে যাবে। এরপর দেখা গেল যে, সে নিয়মিত ক্লাসে আসছে। সবকিছু তার কাছে চেনা।


উপসংহার :

পরিশেষে বলা যায় যে, বিচিত্র পরিবেশের বিভিন্ন শক্তি প্রাণীর উপর বিভিন্নরূপে ক্রিয়া করে । জীবনধারণের তাগিদে আমরা পরিবেশের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলছি, পরিবেশের সাথে সংগতিস্থাপন করে চলতে না পারলে কোন প্রাণীর পক্ষে এ জগতে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না। সে কারণে প্রাণীকে তার পরিবেশের সাথে উপযোগী নিত্য নতুন আচরণ সম্পন্ন করতে হয়। নতুন নতুন আচরণ সম্পন্ন করা অর্থাৎ, নতুন কোনকিছু আয়ত্ত করাই হল শিক্ষার লক্ষ্য। প্রাণীর অতীত অভিজ্ঞতাই প্রাণীকে নতুন আচরণ সম্পন্ন করতে সহায়তা করে ।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!