অলীক বীক্ষণ বলতে কী বুঝ?

admin

ভূমিকা :

ধ্রুবকতা প্রত্যক্ষণের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। পৃথিবী সম্বন্ধে আমাদের অভিজ্ঞতা অপরিবর্তনীয় থাকে। একটি লোককে দূর থেকে যেমন দেখি, কাছে আসতে থাকলেও তার আকৃতি পরিবর্তিত হয় না, খাবার থালাটি সামনে থেকে দেখলেও একটি বৃত্ত ও পাশের থেকে দেখলেও অর্ধবৃত্ত বলে মনে হয় না। মাথা ও কানের অবস্থান পরিবর্তিত হলে একটি শব্দের উৎস পরিবর্তিত হয় না ।


অলীক বীক্ষণ বলতে কী বুঝ?

অলীক প্রত্যক্ষণ :

বাস্তবে কোন উদ্দীপক নেই অথচ তাকে প্রত্যক্ষণ করা হয়, এরূপ প্রত্যক্ষণই অলীক প্রত্যক্ষণ বা অলীক বীক্ষণ নামে পরিচিত। অর্থাৎ, অবাস্তব উদ্দীপকের প্রত্যক্ষণই হচ্ছে অলীক প্রত্যক্ষণ। উদাহরণস্বরূপ, আবছা অন্ধকারে একজন দেখতে পেল সাদা কাপড় পরিহিত এক মহিলা তাকে ইশারায় ডাকছে। অথচ বাস্তবে সেখানে কোন মহিলার অস্তিত্ব নেই। অথবা কেউ শুনতে পায় যে, ফেরেশতা তাকে ডাকছে। কিন্তু তারই পার্শ্বে বসে থাকা অন্যান্য ব্যক্তিরা শুনতে পায় না। অলীক প্রত্যক্ষণ যে কোন ইন্দ্রিয়ের সম্পর্কে হতে পারে। যেমন- ঘরে কোন গন্ধ নেই অথচ বিশ্রী গন্ধ অনুভব করা অথবা ত্বকের নিচ দিয়ে ছারপোকা হেঁটে বেড়াচ্ছে বলে মনে হওয়া ইত্যাদি ।


অলীক প্রত্যক্ষণের কারণ :

যারা উম্মাদ রোগে ভুগছে কিংবা যাদের কোন মানসিক বৈকল্য আছে, তাদের ক্ষেত্রেই অলীক প্রত্যক্ষণ ঘটে থাকে। ভয় কিংবা আবেগীয় দ্বন্দ্বের ফলে অলীক প্রত্যক্ষণ ঘটতে পারে। কোন বিষয় সম্পর্কে গভীর ইচ্ছা বা আশা পোষণ করলে সে বিষয় আশানুরূপভাবে ঘটেছে, এমন অভিজ্ঞতা হতে পারে। আবার ইন্দ্রিয়গুলো এবং গুরুমস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে, কিংবা মাদকদ্রব্য সেবনের দরুন মানসিক বিষঙ্গের (dissociation) ফলেও অলীক প্রত্যক্ষণের সংবেদনজনিত অভীভাবনের (hyprotic suggestion) ফলেও স্বাভাবিক ব্যক্তি অলীক প্রত্যক্ষণ করতে পারে। অভিজ্ঞতা হতে পারে।


উপসংহার :

পরিশেষে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, অধ্যাস এবং অলীক বীক্ষণের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকলেও এদের মধ্যে সাদৃশ্য বর্তমান। এরা উভয়ই একই ধরনের ভুল প্রত্যক্ষণ এবং উভয়ই স্বাভাবিক ঘটনা থেকে ভিন্নতর। ভ্রান্ত প্রত্যক্ষণ বাস্তব জগতের কোন বিষয়কে ভুল অনুমান করে। কিন্তু অলীক প্রত্যক্ষণ সম্পুন্ন অবাস্তব বিষয় অনুভব করে।


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!